এবার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ নামে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, তারা ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত সরকারের প্রতিনিধি। এই সরকারে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা দুজন এসেছি। বাকিরা মাঠে ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসেবে এখনো আন্দোলন করছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সচিবালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ তাকে এসব কথা জানান।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নতুন বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাতে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে যে সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তা ছাত্র-জনতার প্রস্তাবিত সরকার। সমন্বয়কারীদের মধ্যে আমরা দুজন সরকারে এসেছি। বাকিরা এখনো আন্দোলন করছে। আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যেন ব্যাহত না হয় এবং সরকার যেন সে কাজগুলো ঠিকঠাক মতো করে, সেজন্য বাইরে থেকে তারা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা শুনলেও এক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে। যে পরিমাণ অর্থ এসব প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে, তার সুফল পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। আমরা দুর্নীতির জায়গাগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছি।’
সম্প্রতি বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত। এ প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বন্যার্তদের সঙ্গে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বন্যাদুর্গত এলাকায় ইন্টারনেট ফ্রি করে দেওয়া হয়। কয়েকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপন করে মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখা হয়।’
তিনি বলেন, ‘টাওয়ারগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য জেনারেটরের ফুয়েলও ফ্রি করে দেওয়া হয়েছিল। আগামীতে আমরা দেশের প্রত্যেকটি জেলায় ভি-স্যাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে যেকোনো দুর্যোগে সেই এলাকায় মোবাইল বা টেলিযোগাযোগ করা সম্ভব হয়।’
রাষ্ট্রদূত সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে ফ্রান্স সরকার বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ দিতে চায়- এমন আগ্রহ প্রকাশ করলে উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি এখন বর্ডার সিকিউরিটির মতোই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের তরুণরা এবং অফিসিয়ালরা যদি এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন, তবে তা দেশের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।’
এদিকে সাক্ষাতের শুরুতে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান। ফ্রান্সের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সবসময় আগ্রহ ছিল এবং আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।